September 8, 2024, 1:54 am

আন্তজেলা ডাকাত দলের ছয়জন গ্রেপ্তার দিনে ট্রাক শ্রমিক, রাতে ডাকাত

যমুনা নিউজ  বিডি: কারও বাড়ি নারায়ণগঞ্জ, কারও বাড়ি শরীয়তপুর। আছেন ফরিদপুরের বাসিন্দাও। আন্তজেলা ডাকাত সদস্য দলের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার পুলিশ। তারা দিনে ট্রাক শ্রমিক হিসেবে কাজ করলেও রাতে ডাকাতি করাই তাদের পেশা।

বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে উপলক্ষ্যে এক প্রেস ব্রিফিং করা হয় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে। ওই ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম এ তথ্য জানান।

গ্রেপ্তার হওয়া ওই ছয় ব্যক্তি হলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াই হাজার ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের মো. কবির হোসেন (৪৩), একই ইউনিয়নের জালাকান্দী গ্রামের সাইফুল ইসলাম ওরফে সাঈদ (৩২), একই ইউনিয়নের হৃদয় (৩৫), শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার চর বয়রা গ্রামের মো. সাইফুল ইসলাম (২৭), একই উপজেলার চরনারায়ণপুর গ্রামের ফরহাদ হোসেন (৩২) ও ফরিদপুর সদরের পরমানন্দপুর এলাকার আতিয়ার শেখ (৩৮)।

গত ১৪ জুন ডাকাত দলের সদস্যরা ফরিদপুর সদরের গোসাই ভাবুকদিয়া গ্রামে মায়ারানী সরকারের (৪০) বাড়ির দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে রাত ১টা ৪৫ মিনিট হতে ৩টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে ডাকাতি করে। তারা ওই বাড়ির সবাইকে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ওই বাড়ি থেকে সাড়ে তিন ভরি ওজনের দুটি সোনার বালা, দুই জোড়া কানের দুল ও তিন জোড়া কানের রিং, নয় ভরি ওজনের সাত জোড়া রূপার নূপুর, কোমরের বিছা ও ১১টি রুপার অংটি, তিনটি মুঠোফোন ও নগদ ১১ হাজার টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যান। এ ব্যাপারে মায়ারানী সরকার বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ডাকাতির অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ সুপার মোর্শেদ আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ডাকাতির দিন এই ছয়জনসহ তাদের আরও কয়েকজন সদস্য ঢাকার যাত্রবাড়ি থেকে একটি পিকআপ ভাড়া করেন। ওই পিকআপ নিয়ে তারা ভাঙা এক্সপ্রেস সড়ক দিয়ে ফরিদপুরে এসে মায়ারানীর বাড়িতে ডাকাতি করে আবার একই পথে যাত্রাবাড়ি চলে যান।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, গুপ্তচর নিয়োগ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ডাকাত চক্রের সদস্য হৃদয়কে প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গতকাল ২৫ জুন রাতে নারায়ণগঞ্জ, শরীয়তপুর ও ফরিদপুরে অভিযান চালিয়ে আন্তজেলা ডাকাতদলের ওই ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, এ ডাকাতির সাথে জড়িত আরও কয়েকজন সদস্য রয়েছে, তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আন্তজেলা ডাকাত দলের সাথে ফরিদপুরের গ্রেপ্তার হওয়া আতিয়ার শেখ তথ্য প্রদানকাজে জড়িত। তবে এ ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত পিকআপসহ চালককে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, দ্রুত ডাকাদলের অপর সদস্যদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম আরও বলেন, ডাকাত দলের এ সদস্যরা বিভিন্ন এলাকায় সেই এলাকার নিজস্ব সোর্স ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে একইভাবে বসতবাড়িতে ডাকাতি করে আসছে। বসতবাড়ি না পেলে এরা দেশের বিভিন্ন মহাসড়কেও ডাকাতি করত।

পুলিশ সুপার বলেন, তারা ডাকাতিতে আসা-যাওয়ার সময় ট্রাকে এমনভাবে অবস্থান করে রাতে চেকপোস্টে আটকালে তারা নিজেদের মালামাল নামানো-ওঠানোর শ্রমিক হিসেবে পরিচয় দেয়। তাদের প্রত্যেকের নামে একাধিক ডাকাতি মামলা রয়েছে। ডাকাত চক্রের বাকি সদস্যদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হবে।

তবে মায়ারানীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও ওই বাড়িতে থেকে ডাকাতি হওয়া সোনা, রূপার অলংকার, টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে উদ্ধার করা হয়েছে একটি বাটন ফোন ও দুটি বিদেশি টর্চ লাইট।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান, ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক তুহিন লস্কর। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতয়ালী থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহবুল করিম প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD